অলসতার কারণেই জীবনে থাকবে অভাব | কারন ও প্রতি কার

অলসতার কারণেই জীবনে থাকবে অভাব:

অলসতার কারণেই জীবনে থাকবে অভাব:

কোনো কাজ  আজ শুরু করবো, কাল শুরু করবো বলে আর শুরু করা হয় না। তাই স্বপ্ন দেখলেও সেই  স্বপ্ন পুরন হয় না।আর এর একটাই কারণ হলো অলসতা ।

আর এই কারণেই আমাদের জীবনের বেশিরভাগ লক্ষ্যগুলো পুরন হয় না। ফলে জীবনে নেমে আসে অভাব। আর এ অভাব শুধু আর্থিক অভাব নয়, মানসিক শান্তির অভাবও হতে পারে। কারন একের পর এক পরিকল্পনা করেও আপনি যখন সেটা পুরন করতে পারেন না  তখন আপনার মধ্যে হতাশা কাজ করে। মনে হয় যেন আমার দ্বারা কোন কিছুই করা সম্ভব না।

 অনেকের অলসতার পেছনে থাকে ব্যর্থ হওয়ার ভয়। কাজ টা করলে যদি সফল না হই তার থেকে না করাই ভালো- এই চিন্তাই আমাদের অনেক সপ্নকে ব্যর্থ করে দেয়।

অলসতা মূলত একটি অভ্যাস। আপনি যদি নিজের মধ্যে পরিশ্রম করার অভ্যাস গড়ে তুলেন তাহলে আপনার কাছে অনেক কাজ করলেও খুব কম কাজ করেছেন বলে মনে হবে আবার আপনি যদি ফাঁকিবাজি করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করেন তাহলে একটু কাজ করলেই অনেক কাজ করেছেন বলে মনে হবে।

আমরা বেশিরভাগ মানুষই ছোটবেলা থেকে খুব পড়ার রুটিন তৈরি করেছি কিন্তু সেই রুটিন এক দিন কি দুই দিনের বেশি ফলো করতে পারি নি ফলে সেই রুটিন যে লক্ষ্য নিয়ে করা হয়েছিলো সেই লক্ষ্য পুরন করতে পারে নি। এভাবেই আমরা কিছু দিন পর অন্য একটি লক্ষ্য নিয়ে রুটিন তৈরি করে আবার ব্যর্থ হয়েছি।

আর এই ব্যর্থ হওয়ার পেছনে একটাই ভুল ছিল তা হলো আমরা ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে যেতে পারি নি। ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারার মূল কারন অলসতা । আমরা যখন কোন কাজ শুরু করি তখন দুই দিন সেটা নিয়ে কাজ করলেই মনে হয় অনেক কাজ করে ফেলছি। আর এই কারনেই দেখা যায় পরের দিন আর কোন কাজ করি না।ফলে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয় এবং কাজটা করার আগ্রহ চলে যায়।



জেনে নেই অলসতার প্রভাব কাটিয়ে কাজে আগ্রহ ধরে রাখার কিছু কৌশল বা টিপস


      ◆নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যে অটুট থাকা◆


আজকে এটা, কালকে ওটা নিয়ে কাজ করলে কোনটাতেই সাফল্য পাওয়া যায় না আসলে। একটি লক্ষ্য অর্জনের পর অন্য একটি নিয়ে কাজ করতে হয়। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ একসাথে বিভিন্ন কাজের সাথে লিপ্ত থাকি ফলে কোনটাতেই তেমন সাফল্য আসে না ফলে আমরা হতাশ হয়ে কাজ করা বন্ধ করে দেই। তাই নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা অলসতার প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে গুরুত্বপূর্ণ।


               ◆ ছোট থেকে শুরু করা◆


কারো স্বপ্ন যদি হয় বড় কিছু অর্জন করা তাহলে তার কাজও করতে হবে অনেক। আর এত কাজ করতে হবে ভেবেই আমরা কাজ করা শুরু করি না। তাই লক্ষ্যকে ছোট ছোট পদক্ষেপে ভাগ করে নিলে লক্ষ্য অর্জন করা অনেক সহজ হয় এবং নিজের মধ্যেও অলসতা কাজ করে না।


    ◆সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি বাছাই করা◆


সারাদিনে আমরা অনেক ধরণের কাজই করি। কিন্তু কোন কাজটা সবচেয়ে বেশি জরুরী সেটা বাছাই করে রাখলে সেই কাজটা করতে আপনি এক ধরণের আকর্ষণ অনুভব করবেন। ফলে কাজটি করা সহজ হবে এবং অলসতা আপনাকে ছুঁতেও পারবে না।

     ◆ নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নেয়া◆


যেকোন লক্ষ্য ঠিক করে সেই লক্ষ্য অর্জনে আপনি কতটুকু সময় দিবেন তাও ঠিক করে ফেলুন। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি এই সময়ের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ করবেনই যত বাধাই আসুক তাহলেই আপনি অলসতাকে দূরে রাখতে পারবেন।


      ◆ইতিবাচক ফলাফল আশা করা◆


আপনি যে লক্ষ্যে কাজ করছেন সে লক্ষ্য অর্জনে যদি আপনি একশো ভাগ বিশ্বাসী না হন তাহলে কখনোই সে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন না। যে কাজটা আপনি করছেন সেটায় আপনি সফল হবেন সেই আত্মবিশ্বাসের সাথেই আপনাকে কাজ করতে হবে।

◆আসক্তি সৃষ্টি করে এমন জিনিষ থেকে দূরে থাকা◆


দিনের বেশিরভাগ সময়েই আমাদের সঙ্গী হয়ে থাকে মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ল্যাপটপ কিংবা টেলিভিশন। এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমাদের মধ্যে আসক্তি তৈরি হয় আর সারাদিন এগুলোতেই সময় দেই আমরা। ফলে জরুরী কাজ গুলো করা হয়ে উঠে না আমাদের এবং শারীরিক পরিশ্রমেও এক ধরনের অনীহা কাজ করে। তাই অলসতা দুর করতে এসকল জিনিষ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।


             ◆নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন◆


অলসতা তখনই ভর করে যখন আমরা ভুলে যাই আমাদের লক্ষ্য অর্জন করা কেন প্রয়োজন। আপনি একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন এবং সে লক্ষ্যে পৌঁছানো কেন প্রয়োজন তা আপনি খুব ভালো ভাবেই জানেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অনেক সময় আমরা অসচেতন হয়ে যাই ফলে কাজে অনীহা চলে আসে। কালকে থেকে আবার শুরু করবো বলেও কাজটা আর শুরু করা হয় না।

তাই নিজেকে নিজের প্রশ্ন করতে হবে কেন আপনি কাজটি শুরু করেছিলেন। নিজেকে নিজের অনুপ্রানিত করতে হবে এবং সবসময় মনে রাখতে হবে কি কারনে আপনি কাজটি শুরু করেছিলেন। আর কেনোই বা এই লক্ষ্যটি অর্জন করতে চান? এবং উত্তর পাওয়ার সাথে সাথেই কাজে নেমে পড়বেন তাহলেই আর অলসতা আপনাকে আটকাতে পারবে না।

অনেক সময় এমন হয় ঘুম থেকে উঠবো কি উঠবো না তা নিয়ে অলসতা কাজ করে কিন্তু আপনি যদি ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথেই বিছানা ছেড়ে অন্য কাজ করা শুরু করে দেন বা একটু হাঁটাহাঁটিও করেন তাহলেও আপনার আর ঘুম আসবে না যদি আপনি পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে থাকেন। তাই কোন কাজ বা আইডিয়া মাথায় আসার সাথে সাথেই আমাদেরকে সেটা নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিতে হবে।

পৃথিবীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দারিদ্রতা বা অভাবের মূল কারন নিরক্ষরতা নয় বরং অলসতা। কারন একজন মূর্খ ব্যক্তি তার পরিশ্রম দ্বারা জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারলেও একজন জ্ঞানী ব্যক্তি যদি অলস হয় তাহলে সে কখনোই সফল হতে পারবে না। তাই সফলতা অর্জনে অলসতার কোন জায়গা নেই।

লেখায় যদি কোন ভুল থেকে থাকে বা যদি কোন বাক্য বুঝতে সমস্যা হয় তবে মন্তব্য করে জানাবেন। আপনাদের কাছে যদি আরো কার্যকরী কোন প্রক্রিয়া থাকে যা দ্বারা অলসতার প্রভাব থকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব তাহলে দয়া করে মন্তব্য করে জানাবেন। আসুন অলসতাকে না বলি এবং আমরা সবাই নিজেদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাই। আমরা নিজেদের সুন্দর স্বপ্ন গুলোকে মেরে না ফেলে নতুন উদ্যমে কাজ করে স্বপ্নগুলোকে বাস্তবরূপ দেই এবং একটি সুন্দর, সৃষ্টিশীল ও প্রাচুর্যময় পৃথিবী গড়ে তুলি।



অলসতার কারণেই জীবনে থাকবে অভাব | কারন ও প্রতি কার অলসতার কারণেই জীবনে থাকবে অভাব | কারন ও প্রতি কার Reviewed by Admin on ১১:১১ AM Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.